ভারতের উত্তর প্রদেশের এক নারী শ্রমিক তার ‘জনধন অ্যাকাউন্ট’ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে তাতে অস্বাভাবিকভাবে আসা ১০০ কোটি রুপি দেখে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্তী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত স্টেট ব্যাংক ইন্ডিয়ার (এসবিআই) মিরাট শহরের শারদা রোড শাখায় শীতল যাদব নামের ওই নারীর ‘জনধন অ্যাকাউন্টে’ এই ট্রানজেকশনের বিষয়টি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
‘জনধন অ্যাকাউন্ট’ ভারতের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য তৈরি বিশেষ অ্যাকাউন্ট, যা কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই খোলা যায়। তবে এ ধরনের অ্যাকাউন্টে একসঙ্গে ৫০ হাজার রুপির বেশি অর্থ রাখার নিয়ম নেই।
যে নারীর অ্যাকাউন্টে ওই ১০০ কোটি রুপি এসেছে, সেই শীতল যাদব স্থানীয় একটি কারখানার প্যাকেজিং বিভাগের মাসিক পাঁচ হাজার রুপি বেতনে কাজ করেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৮ ডিসেম্বর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ তুলতে গিয়ে এই অস্বাভাবিক ১০০ কোটি রুপি দেখে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই নারী।
তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা তার অভিযোগে গুরুত্ব না দিয়ে তাকে বারবার পরে আসতে বলে। অবশেষে সোমবার বিষয়টি জানিয়ে তার স্বামী জিলেদার সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক চিঠি পাঠিয়ে ওই অর্থের উৎস খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
চিঠিতে স্টেট ব্যাংকের শারদা রোড শাখায় নিজের একটি ‘জনধন অ্যাকাউন্ট’ রয়েছে জানিয়ে অভিযোগ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে বাড়ির কাছের আইসিআইসিআই ব্যাংকের একটি এটিএম বুথে যান শীতল। সেসময় তিনি অ্যাকাউন্টে ৯৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৪ রুপি দেখে হতভম্ব হয়ে যান তিনি।
বিষয়টি বিশ্বাস করতে না পেরে শীতল যাদব টাকার তোলার লাইনে দাঁড়ানো আরেক জনকে জিজ্ঞেস করেন, তিনিও একই পরিমাণ অর্থ থাকার কথা নিশ্চিত করেন। এরপর ইয়েস ব্যাংক নামে অন্য একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে গিয়ে সেখান থেকেও টাকার পরিমাণ একই দেখতে পান।
এরপর দুদিন স্টেট ব্যাংকে গিয়ে বিষয়টি জানালেও কর্মকর্তারা তার অভিযোগ নেননি। প্রথমে তারা একদিন পর আসতে বলে সেসময় ম্যানেজার বিষয়টি ঠিক করতে সহযোগিতা করতে পারবে বলেও জানায়। পরে আবার গেলে আবার ভুলভাল বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়।
স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় হতাশ হয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি পাঠাতে একজন শিক্ষিত মানুষের দারস্থ হন বলে গণমাধ্যমে জানান শীতলের স্বামী জিলেদার সিং।
তিনি বলেন, “আমাদের এই সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা পেতে আমরা ২৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর একটি চিঠি পোস্ট করেছি। অ্যাকাউন্টে ওই ১০০ কোটি রুপি কোত্থেকে এল, যেখানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার রুপির বেশি রাখার নিয়ম নেই।”
একথা বলার সময় এটিএম বুথের স্লিপ ও ব্যাংকের পাসবইও সাংবাদিকদের দেখান তারা।
তবে এ বিষয়ে ব্যাংক কর্মচারী কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় এনডিটিভি।